শনিবার,১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সরিয়ে দেয়া হলো নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে

সরিয়ে দেয়া হলো নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে

 ‘জনস্বার্থ’ দেখিয়ে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার। এর প্রতিক্রিয়ায় তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘জলদস্যু, ভূমিদস্যু, বালুখেকো, দখলদার, দূষণকারীর বিজয় হয়েছে।’
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদী দখলের পেছনে ‘একজন নারী মন্ত্রীর ভূমিকা’ রয়েছে বলে বক্তব্য দেয়ার ২৪ দিনের মাথায় বুধবার তার নিয়োগ বাতিল করা হল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এদিন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
যুগ্মসচিব আশরাফুল আলম স্বাক্ষরিত এই আদেশে বলা হয়, ‘ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, চেয়ারম্যান জাতীয় নদী কমিশনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ জনস্বার্থে এতদ্বারা বাতিল করা হলো।’ তবে কোন জনস্বার্থে এই আদেশ জারি করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।
২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরকে তিন বছরের চুক্তিতে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয় সরকার। সেই হিসেবে ২০২৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তার নিয়োগের মেয়াদ ছিল। কিন্তু ১৬ মাস আগেই সরে যেতে হলো তাকে।
এই আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে মঞ্জুর আহমেদ বলেন, ‘সরকার আমাকে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছিল, সরকার নিয়োগ বাতিল করেছে, সেই এখতিয়ার তাদের আছে। আমি শুধু একটা কথাই বলব, আজকে সারা বাংলাদেশ পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, আড়িয়াল খাঁসহ সব নদ-নদীর জলদস্যু, ভূমিদস্যু, বালুখেকো, দখলদার, দূষণকারীর বিজয় হয়েছে। নদী দখল ও দূষণ নিয়ে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিন বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়ার পর অনেক পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছিলাম। এটা থেমে গেল।’যা বলেছিলেন মঞ্জুর
গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব নদী দিবসের এক সেমিনারে চাঁদপুরের মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদী দখলের পেছনে ‘একজন নারী মন্ত্রীর ভূমিকা রয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন মঞ্জুর আহমেদ।
সেদিন তিনি বলেন, ‘মেঘনায় এর আগে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। যাদের নেতৃত্বে এই কাজ বন্ধ করা হয়েছে, তাদের পরে পানিশমেন্ট হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। স্ট্যান্ড রিলিজ দেয়া হয়েছ। আবার সেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। আর এখানে ভূমিকা রয়েছে একজন নারী মন্ত্রীর। এ হায়েনার দল থেকে নদীকে বাঁচানো যাচ্ছে না। এই হায়েনার দলের পেছনে আছে রাজনৈতিক শক্তি। চাঁদপুরের ওই নারী মন্ত্রী তাদের সহায়তা করেন।’
সেই বক্তব্যের কারণেই সিদ্ধান্ত?
সেই বক্তব্যের কারণে নিয়োগ বাতিল হয়েছে বলে মনে করেন কি না, এই প্রশ্নে মঞ্জুর আহমেদ বলেন, ‘আমি এটার সঙ্গে (নিয়োগ বাতিল) ওটার কোনো লিংক করব না। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত, সরকার নিয়েছে। আপনাদের (সাংবাদিক) যদি মনে হয় সেটা হতে পারে। আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।
‘এই কয় মাস আমি সততার সঙ্গে কাজ করেছি কি না, কাজে কোনো শৈথিল্য ছিল কি না, সেটা আপনারা বিচার করবেন। সে বিচারে যদি আমি উৎরে যাই তাহলে মনে করব আমি সফল ছিলাম। আমি ডিসিপ্লিন মেনে চলি। সরকার ইচ্ছে করেছে, তাই নিয়োগ বাতিল করেছে। সরকার যেটা ভালো মনে করেছে তাই করেছে।’
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email