
পন্য পরিবহন ধর্মঘটকে অসমর্থন ও
আহ্বানকারীকে আইনের আওতায় আনার দাবীতে
সংবাদ সম্মেলন
আজ ১৮ মে শনিবার সকাল ১১ ঘঠিকায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এর ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইমমুভার-ট্রেইলার, ফ্ল্যাটবেড প্রভৃতি পণ্যবাহী গাড়ির মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত প্ল্যাটফর্ম বৃহত্তর চট্টগ্রাম পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ইউনাইটেড ফ্রন্ট-এর উদ্বেগ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পাঠ করেন শ্রমিক সংগঠক ওজি উল্লাহ

উক্ত সংবাদ সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তু ছিল ‘পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের লেবাসধারী পেশাদার একটি চিহ্নিত চাঁদাবাজ গোষ্ঠী কর্তৃক বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইমমুভার-ট্রেইলার, ফ্ল্যাটবেড প্রভৃতি পণ্যবাহী গাড়ির অসহায় মালিক-শ্রমিকদের জিম্মি করে চট্টগ্রাম বন্দর ও নিকটবর্তী এলাকাসমূহে গড়ে তোলা ঘৃণ্য চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য নিরাপদ ও অটুট রাখা এবং চাঁদাবাজদের হাতে জুলুম-নির্যাতনের নির্মম শিকার ভুক্তভোগীদের দায়েরকৃত চাঁদাবাজির মামলা প্রত্যাহারের বেআইনি দাবিতে ১৯ ও ২০ মে আহুত পণ্য পরিবহন ধর্মঘট প্রতিহত করা এবং কথায় কথায় পরিবহন ধর্মঘট আহ্বানকারী এসব দুর্বৃত্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা।
তিনি বলেন,আমাদের বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য যেন সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ নেই এবং কারো দায়দায়িত্বও নেই। অথচ, প্রাণঘাতী মহামারি, ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা, খরা এককথায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মনুষ্যসৃষ্ট রাজনৈতিক গোলযোগসহ শত প্রতিকূলতার মধ্যেও পণ্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য, অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য, পণ্যসামগ্রীর দৈনন্দিন সরবরাহ ব্যবস্থা, শিল্পোৎপাদন, কৃষি উৎপাদন, উন্নয়ন প্রকল্প এককথায় জাতীয় অর্থনীতির চাকাকে সদা সচল ও সক্রিয় রেখেছেন। জাতি ও জনগণকে বিপুল সেবা দেওয়া সত্ত্বেও আমরা সরকারের নিকট থেকে আজ পর্যন্ত কোনো মানবিক মর্যাদা ও মূল্যায়ন পাইনি। ফলে পণ্য পরিবহন খাতের মালিক ও শ্রমিকরা চরমভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ) সব মিলিয়ে আমাদের সামনে এখন ঘোর অন্ধকার ও ভবিষ্যত অনিশ্চিতায় ভরা।
এক বছরের অধিক সময় থেকে লোডিং-আনলোডিং ট্রিপ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে মালিকের ব্যবসা ও শ্রমিকের দৈনন্দিন জীবন জীবিকা স্থবির হয়ে গেছে। এমন দুর্বিষহ ও দিশাহারা অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের লেবাসধারী পেশাদার একটি চিহ্নিত চাঁদাবাজ চক্র বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হাজার হাজার ট্রাক, মিনিট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইমমুভার- ট্রেইলার, ফ্ল্যাটবেড প্রভৃতি পণ্যবাহী গাড়ি থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের গেইট গেইটে ও নিকটবর্তী এলাকাসমূহে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে আদায় করছে।
এই বেআইনি চাঁদা দিতে অস্বীকার ও প্রতিবাদ করার করলে অসংখ্য চালক ও মালিক চাঁদাবাজদের হাতে নির্যাতনের শিকার এবং রক্তাত জখম হয়েছেন। এইরূপ অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর ঘটনাস্থল বন্দর এলাকায় চালক-মালিকরা একাধিকবার প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে, নিকটস্থ সড়ক অবরো করেছে এবং এর পরিণতিতে বন্দর কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিলো।
পণ্য পরিবহনের ভুক্তভোগী ও ক্ষুব্ধ চালক-মালিকরা বন্দর ও আইনশৃঙ্খল কর্তৃপক্ষের নিকট এর স্থায়ী সমাধান হিসেবে ঘৃণ্য চাঁদাবাজি বন্ধ ও চিহ্নিত চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করে আইন আমলে নেওয়ার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি তুলে ধরেছিলো।
এত কিছুর পরও বন্দর ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে নীরব ও নির্বিকার থেকেছেন এবং এখনো তেমনটি রয়েছেন।
বরং বন্দর ও আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষের অসাধু অংশের পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় এই অবৈধ চাঁদাবাজি এ চাঁদাবাজদের দ্বারা মালিক-শ্রমিকদের ওপর জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন এই চাঁদাবাজদের খুঁটির জোর হলো সাবেক এক মন্ত্রী, বর্তমানে সংসদ,তাঁর নেতৃত্বাধীন সড়ক পরিবহন খাতের একটি শ্রমিক ফেডারেশনের ঝান্ডা উড়াচ্ছে।
পরিশেষে তিনি সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এই ধর্মঘটকে সমর্থন করি না বলেই আগামী ১৯ ও ২০ মে যথানিয়মে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা চলমান রাখবোই। জেলা পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কেএম মহিউদ্দিন,বৃহত্তর চট্টগ্রাম পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ইউনাইটেড ফ্রন্ট এর আআহ্বায়ক চৌধুরী জাফর আহাম্মদ, ইউনাইটেড ফ্রন্ট মহাসচিব জয়নাল খান লাদেন, মহাসচিব মালিক গ্রুপ সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন, মালিক গ্রুপ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম দুলাল, মালিক গ্রুপ শাখা কমিটির সভাপতি যথাক্রমে আনোয়ার পাশা, মোঃ নেওয়াজ, মহিউদ্দিন ভান্ডারী, মালিক গ্রুপ ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আব্দুল কাদের, মোঃ জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ মুকুল, মিলন মোজাম্মেল বেলাল প্রমূখ।