শনিবার,১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে বক্তব্য কৃত্রিম বুদ্ধিমতা নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন —অধ্যাপক ইউনূস

জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে বক্তব্যে

কৃত্রিম বুদ্ধিমতা নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন

—————-ড,মুহাম্মদ ইউনূস


বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে বক্তব্য রেখেছেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। মাতৃভাষা বাংলায় দেওয়া ইউনূসের এই ভাষণে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি গুরুত্ব পেয়েছে প্রযুক্তিগত দিক। বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমতা নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস। পাশাপাশি বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগজনিত অর্জিত সুফল থেকে পিছিয়ে না পড়ে, সে বিষয়েও বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

এ সময় বাংলাদেশের শ্রমবাজারে তরুণ-তরুণীদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তিনি বলেন, প্রতি বছর প্রায় ২৫ লাখ তরুণ-তরুণী বাংলাদেশের শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশের বিপুল জনশক্তির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই তরুণ। এই জনশক্তিকে বর্তমান ও আগামীর জন্য গড়ে তোলা বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। ক্রমপরিবর্তশীল কর্মজগতে একজন তরুণকে প্রতিনিয়ত নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হয় এবং কর্মপরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া শিখতে হয়। এজন্য বাংলাদেশ যখন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীতি হচ্ছে, তখন আমরা শিক্ষা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা লাভের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছি।

কৃত্রিম বুদ্ধিমতা নিয়ে ইউনূস বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভাবনীয় বিকাশ এবং এর বহুমাত্রিক প্রয়োগে বাংলাদেশ বিশেষভাবে আগ্রহী। আমাদের তরুণ সমাজ ‘জেনারেটিভ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’-এর সম্ভাবনা নিয়ে উচ্ছ্বসিত। একজন বিশ্ব নাগরিক হিসেবে তারাও চায় নতুন পৃথিবীতে নিয়োজিত হবে, কর্মক্ষম হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে। বাংলাদেশের মতো বৃহৎ তরুণ জনগোষ্ঠীর দেশ যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগজনিত অর্জিত সুফল থেকে পিছিয়ে না পড়ে, বিশ্ব সম্প্রদায়কে তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে, নিশ্চিত করতে হবে যেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে কর্মক্ষেত্রে মানুষের চাহিদা সংকুচিত হয়ে না যায়।

‘অটোনমাস ইন্টেলিজেন্স’ নিয়ে বিজ্ঞানীসহ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ইউনূস বলেন, অটোনমাস ইন্টেলিজেন্স বা যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজেই নিজের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সম্প্রসারিত করতে পারে, মানুষের কোনো হস্তক্ষেপ ব্যতিরেকে, তার ব্যাপারে আমরা বৈজ্ঞানিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, তারা যেন এক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার আগে মানুষের উপর এর প্রভাব সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে অগ্রসর হন। আমাদের ধারণা অটোনমাস ইন্টেলিজেন্স মানুষের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলতে পারে।

সবশেষে শান্তি, সমৃদ্ধি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশের ভূমিকা ক্রমাগতভাবে জোরদারের নিশ্চয়তা দিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টার ভাষণ শেষ করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email