শুক্রবার,১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

হাফেজ হতে গিয়ে অন্ধ হয়ে ঘরে ফিরলো বোয়ালখালীর আয়াতুল ইসলাম

হাফেজ হতে গিয়ে অন্ধ হয়ে ঘরে ফিরলো বোয়ালখালীর আয়াতুল ইসলাম

অসহায় মায়ের একমাত্র অবলম্বন আয়াত ইসলাম। শিক্ষিত হয়ে মাতা উচু করে দাড়াবে সমাজে,দুঃখ গোছাবে অসহায় মায়ের। অভাব অনটনকে স্পর্শ করতে দেয়নি এই অবলম্বনহীন মাতা স্বপ্না আকতার। এই লক্ষ্য মাতায় রেখে ছেলে আয়াতকে শিক্ষার্জনের জন্যে ভর্তি করায় বোয়ালখালীস্থ হাওলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ম শ্রেনীতে। প্রায় ১বৎসর উক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুন্দর ভাবে লিখা-পড়া চলতে থাকে আয়াতের।হঠাৎ অসহায় মায়ের মনে আশা জাগে “কষ্ট করে ছেলেকে যদি হাফেজ তৈরী পারি তবে আমার কষ্ট সার্থক হবে”।

                 আয়াতের চিকিৎসাধীন অবস্থা

অসহায় মায়ের আশাকে সার্থক করার লক্ষ্যে আয়াতুল ইসলামক (৭) কে থাকা,খাওযা-দাওয়া ও মাসিক বেতন বাবদ  ২৫০০/-টাকা হারে ২৪ইং জানুয়ারী হেফজ পড়ানোর লক্ষ্যে ভর্তি করায় বোয়ালখালীস্থ সরোয়াতলী *বাগে সিরিকোট তাহফিজুল কোরআন আইডিয়াল মাদ্রাসায়*।

      বাগে সিরিকোট মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার সময়                                 আয়াতের ছবি

একমাত্র ছেলেকে মাদ্রাসায় রেখে ইসলামিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে,শুরু করতে পারায় অসহায় মায়ের অন্য সকল কষ্টকে কষ্ট মনে হচ্ছে না।সপ্তাহে ২/৩ দিন নাস্তা দেওয়ার উছিলায় স্বপ্না আক্তার ছুটে যান একমাত্র ছেলের বাগে সিরিকোট তাহফিজুল কোরআন আইডিয়াল মাদ্রাসায়

চলে নিয়ম-মাপিক। একদিন (২৮ মে) বিকাল ৪ ঘটিকায় স্বপ্না আক্তার ছেলে আয়াতকে বাগে সিরিকোট তাহফিজুল কোরআন আইডিয়াল মাদ্রাসায় দেখতে গেলে তার বাম চোখ লালচে বিবর্ণ দেখতে পান।

           আয়াতের বর্তমান অবস্থা

স্বপ্না আক্তার  একমাত্র ছেলে আয়াতুল ইসলামের চোখ লালচে বিবর্ণের বিষয় জানতে চাইলে “বাগে সিরিকোট তাহফিজুল কোরআন আইডিয়াল মাদ্রাসা”এর অধ্যক্ষ মোঃ মহিউদ্দিন মাহমুদ মানিক (৩৫) জানান ” চোখে রক্ত উঠেছে “।একসময় ছেলে আয়াতুল ইসলাম মায়ের সাথে চলে আসিবার চেষ্টা করিলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন মানিক সাহেব ধামকিয়ে আয়াতকে মাদ্রাসার ভিতরে পাঠিয়ে দেন।

গত ২৯ মে ভোর ৫:১৫ ঘঠিকায় মোঃ মহিউদ্দিন মাহমুদ মানিক নিজেই আয়াতুল ইসলামকে তার মা(বসবাসরত বাড়ী ৭ নং ওয়ার্ড পোপাদিয়া) স্বপ্না আক্তারের হাতে দিয়ে তাড়াতাড়ি চলে যান।

ছেলের রক্তাক্ত তেতলানো চোখ দেখিয়া মা স্বপ্না আক্তার চিৎকার দিয়া কাদিয়া উঠিলে পার্শ্ববর্তী লোকজন জড়োয়া হয়ে পরে। এক সময় আয়াতুল বলতে থাকে”২৬ মে আনুমানিক সন্ধ্যায় ৭ ঘঠিকায় পড়া না পারার উছিলায় শিক্ষিকা শাহীনা আক্তার (২৪)আমার দিকে সজোরে বেত ছুরে মারিলে, বেতটি  আমার বাম চোখে এসে পড়ে এবং চোখে আঘাত পাই।যখন আঘাতের কারণে ব্যাথায় কান্না করি তখন শাহীন ম্যাডাম আমাকে আদর করে বললেন “তোমার আম্মু আসলে বলবে না কেমন,তোমার আম্মকে বললে আরো বেশী মারবো। তাই ভয়ে আমি আম্মুকে বলি নাই’।

আমাকে কোন ডাক্তারের কাছে না নিয়ে অধ্যক্ষ  মহিউদ্দিন মানিক,শাহীনা আকতার ও তপু হুজুর মিলে পাশের ফার্মেসি হতে চোখের ড্রপ এনে চোখে দিতে থাকে।

২৯ ও ৩০ তারিখ কাপ্তাই রাস্থারমাথা  ভিশন চক্ষু হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম ফয়েজলেকস্থ চক্ষু হাসপাতালে পরীক্ষা ও নিরীক্ষার পরে চিকিৎসক জানান” ভুল চিকিৎসা ও বিলম্বে চিকিৎসার কারনে  দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীন”

এই বিষয় নিয়ে স্বপ্না আক্তার বাদী হয়ে চট্টগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

আসামীরা হলেন,——–

        মোঃ মহিউদ্দিন মাহমুদ মানিক

(১)মোঃমহিউদ্দিন মাহমুদ মানিক,(৩৫)অধ্যক্ষ বাগে সিরিকোট তাহফিজুল কোরআন আইডিয়াল মাদ্রাসা।জোটপুকুর পাড়,সারোয়াতলী,বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।

(২)শাহিনা আক্তার (২৪)সহকারী শিক্ষিকা, বাগে সিরিকোট তাহফিজুল কোরআন আইডিয়াল মাদ্রাসা।

(৩)তপু হুজুর (২৫)সহকারী শিক্ষক, বাগে সিরিকোট তাহফিজুল কোরআন আইডিয়াল মাদ্রাসায়।

(৪)এস এম নাঈম উদ্দিন (২৭)পিতা এসএম নাজের উদ্দিন, ফতে আলীর চৌধুরীর বাড়ী,সৈয়দপুর,বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।

উল্লেখ্য যে, ৪নং আসামী ঘটনাকে ভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করা, বাদীনির চারিত্র হরণ ও বাদীনিকে মিথ্যে মামলায় জড়ানোর হুমকি করে ছিলেন বলে বাদীনি জানান।

চট্টগ্রামের বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক মামলায় গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারি থাকার পরও বোয়ালখালী পুলিশ প্রশাসন(মামলার IO–SI মিনহাজ) আসামীকে গ্রেফতার করতে অক্ষম হন জানিয়েছেন মামলার বাদী স্বপ্ন আক্তার।

তিনি আরো জানান আসামীরা নির্ধীদায় এলাকায় স্বাধীন ভাবে ঘুরাঘোরি করছেন।

স্থানীয় প্রশাসন ও যথাযত কতৃপক্ষের কাছে বাদীনি স্বপ্না আকতারের একান্ত আকুতি আসামীদের সহসা গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হউক।

 

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email