সোমবার,১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিক্ষকনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড সুনীল চক্রবর্তী’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে..

শিক্ষকনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড সুনীল চক্রবর্তী’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে..

বিজয় শংকর চৌধুরী
অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সাবেক সাধারন সম্পাদক,সাবেক সভাপতি পরে উপদেষ্টা শিক্ষকনেতা কমরেড সুনীল চক্রবর্তী’র জন্ম চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা গ্রামের প্রয়াত নিরঞ্জন চক্রবর্তী ও প্রয়াত নির্মলা চক্রবর্তী’র দ্বিতীয় সন্তান। ১৯৪৭ সালের পহেলা জানুয়ারী সম্ভ্রান্ত এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৩ সালে কৃতিত্বের সহিত মেট্রিকুলেশন পাশ করেন শাকপুরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে, আই,এস,সি এবং বিএসসি পাশ করেন কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে। পরে বিএড ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬৮ সালে গোমদন্ডী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে প্রবর্তক কন্যা বিদ্যাপীঠ,রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৮০ পর্যন্ত সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। ১৯৮১ সালে পশ্চিম গোমদন্ডী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন পরে ১৯৯১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আগ্রাবাদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সিগনাস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।
আন্তর্জাতিক সম্মেলন / সেমিনার
১৯৯১ সালে
কোলকাতা নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি সম্মেলনে যোগ দেন৷ ১৯৯২ সালে দিল্লি সার্ক শিক্ষক সম্মেলনে যোগ দেন, ১৯৮৭,১৯৯৪,২০১০ সালে ঢাকা,চট্টগ্রাম বিশ্ব শিক্ষক সংগঠন ” ই,আই” ও ‘ ‘ ফিজে ‘ সেমিনারে যোগ দেন।
রাজনৈতিক ও মুক্তিযুদ্ধ :
১৯৬৩ — ১৯৯৫ ছাত্র ইউনিয়ন প্রকাশন সম্পাদক নাজিরহাট ডিগ্রি কলেজ, ১৯৭২– ১৯৮৫ বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি বোয়ালখালী’র সম্পাদক ছিলেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা: প্রশিক্ষণ, পালাটানা ক্যাম্প,ত্রিপুরা, ভারত।
১৯৬৯সালের গণ অভ্যুত্থানের সেই উত্তাল দিনে তিনি সমমনা ছাত্র – যুবদের সাথে নিয়ে ২০ আগষ্ট প্রতিষ্ঠা করেন জাতীয় শিশু -কিশোর সংগঠন ” খেলাঘর ” এর শাখা আসর ‘ অংকুর খেলাঘর আসর ‘ নিজ গ্রাম পশ্চিম শাকপুরায়। এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা লগ্নে আমিও সুনীলদার সাথে ছিলাম। তিনি অংকুর খেলাঘর আসর এর প্রতিষ্ঠাতা।
তিনি সুদর্শন, সাংগঠনিক তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। সততা ও নিষ্ঠার সাথে সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন। তিনি ছিলেন সুবক্তা। তার বক্তব্যে শ্রোতাগণ মুগ্ধ হতেন। তার বাচন ভঙ্গি, শব্দ চয়ন ছিল চমৎকার। যুক্তি দিয়ে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কথা বলা ছিল তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তিনি বহু গুনে গুনানিত ব্যক্তি ছিলেন। অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি ছিলেন সুনিলদা। মরনব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন রোগ যন্ত্রণা ভোগ করে ২০২০ সালের ৩০ জুলাই পরলোক গমন করেন। মৃত্যু কালে তার স্ত্রী শুভ্রা চক্রবর্তী (শিক্ষিকা), বহু আত্মীয় স্বজন , রাজনৈতিক সহকর্মী ও শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email