
শুভ বিজয়ার মধ্যে দিয়ে দেবী পক্ষ শেষ হল
অনুপম বড়ুয়া পারু
অবশেষে শুভ বিজয়ার মধ্যে দিয়ে এবারের দেবী পক্ষ শেষ হল আজ।এই সপ্তাহ কেটেছে আমাদের মহানন্দে। এই সপ্তাহকে বলা যায় বছরের সেরা সপ্তাহ। চমৎকার কাটিয়েছি বন্ধুদের নিয়ে। আমরা বেশ সৌভাগ্যবান ব্যাচ৯৩।কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ কলেজে লেখাপড়া করেছি সেই গতশতাব্দীর ১৯৯৩ সালে।কিন্তু আমাদের চলাফেরা দেখলে,হাবভাব দেখলে মনে হবে আমরা কলেজেই পড়ছি এখনো।এই চলমান শতাব্দীর ২০২৩ এ এসে মনে হচ্ছে আমরা এখনো কলেজেই পড়ছি।অন্তরে জাগছে আমরা বুড়ো হইনি বয়স বাড়েনি।দূর থেকে কেউ যদি আমাদের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করে তাহলে নিশ্চিত তার মনে হবে আমরা কলেজেরই ছাত্র। অথচ আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবাই বিভিন্ন ডিগ্রি নিয়েছি।কিন্তু আমাদের সেই ডিগ্রি তুচ্ছ আমাদের কাছে।আমাদের মনে হচ্ছে ৯৩ এ ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষাই সেরা ডিগ্রি ।ঘুম হতে উঠলেই মনে পড়ে সেই বন্ধুূদের মুখ।ফোন দিয়ে বসি।কেমন আছিস, কি করছিস।সুস্থ আছিসতো।এখন আমাদের বন্ধুদের মধ্যে এই বন্ধুত্ব অনেক আত্মীয়তাকেও হাড় মানবে।এই বন্ধুত্বের কাছে আত্মীয় ম্লান।আমরা এখন বেশ আপন।বেশ কাছের।সুখদুখের বন্ধু। আমাদের বন্ধু অনিতার নিমন্ত্রণে ষষ্ঠীর দিন অনিতার বাড়ি জৈষ্ঠপুরায় গেলাম।পলাশ, লিটন,সুভাষ,কল্যাণ,সঞ্জয় ও আমি বাইক চালিয়ে শহর থেকে গেলাম।অারো বন্ধু সময়োভাবে যেতে পারেনি।ঘরে ঢুকতেই দেখি অনিতা ও অনিতার জীবনসাথি বাবু অদুল কান্তি চৌধুরী আমাদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। অদুল বাবু এলাকায় বেশ জনপ্রিয় লোক।তাঁদের পূজামন্ডপ বেশ বিখ্যাত হয়।সুন্দর নান্দনিক শৈলীতে পূজামন্ডপ তৈরি করা হয়।এবারও দেখে মুগ্ধ হলাম সেই ঐতিহ্যবাহী মন্ডপ।বন্ধু অনিতা তার জীবনসাথি অদুল বাবুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।পরিচয়ের পর আমরা দুপুরের খাবার খেতে বল্সলাম।যেতে দেরী হওয়াতে এই অবস্থা। খেতে বসে গেলাম।খাওয়ার পর আমরা ড্রয়িং রুমে বেশ আড্ডা জমালাম।সেই আড্ডায় সামিল হলেন অদুলদাও।বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আড্ডা হল।ধর্ম, রাজনীতি,দেশ,বিজ্ঞান ছিল আমাদের আড্ডার বিষয়।সব কটিতে দেখলাম অদুলদার জ্ঞান গর্ব আলোচনা করেছেন।ভেবেছিলাম ধনীরা লেখাপড়া করে কম,জানেও কম।কিন্তু অদুলদাকে দেখলাম সম্পূর্ণ বিপরীত।সব বিষয়ে তাঁর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ। আমি দেখে বিস্মিত হয়েছি।কি সুন্দর তাঁর বলার প্রেজেন্টেশন।
কি নান্দনিক উপাস্থপনা তাঁর। আমি তাঁর কথা শুণছি আর ভাবছি।কি ধর্ম,কি বিজ্ঞান, কি রাজনীতি, কি সমাজ, সংস্কৃতি। সব বিষয়ে মার্জিত রুচিতে আমাদের উপাস্থাপন করছেন তাঁর জ্ঞান গর্ব কথা।যেটারই প্রশ্ন করি সেটারই নান্দনিক উত্তর। আমি সত্যি মুগ্ধ হয়েছি অদুলদার কথায়।সব ধর্ম সম্পর্কে তাঁর যথেষ্ট জানাশোনা আছে।আমরা বিদায় নেবো।আধ মাইল গেটে আমাদের বিদায় জানালো।কত সরল তাঁর মানসিকতা।স্ত্রীর বন্ধুূদের কি, কত সাবলিল ভাবে সম্মান জানালো।আমি সত্যি অভিভূত।সব ধর্মের প্রতি তাঁর অগাধ শ্রদ্ধা, সম্মান।এমন পরোপকারী,সমাজহিতৈষী মানুষ পেয়ে বেশ অনুপ্রাণিত বোধ করছি।দেখেছি সেখানে মন্ডপের সামনে হাজার হাজার মানুষ খাচ্ছে।গরীপ,অসহায় মানুষের তাঁর অকৃত্রিম ভালবাসা আমায় মুগ্ধ করেছে।কী সুন্দর স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন তাঁরা।কত জায়গায় দান দক্ষিনা করছেন তাঁর কোন শেষ নেই।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করছেন বিশাল নান্দনিক মন্দির।বিভিন্ন জায়গায় সুবিধাবঞ্চিতদের সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন।কত অনাথ সন্তানদের দায়িত্ব নিয়েছেন নিজের কাঁধে। সেল্যুট অদুলদা,সেল্যুট বন্ধু অনিতা।আপনার নিরোগ দীর্ঘজীবন লাভ করুন। অসহায় মানুষের পাশে থাকুন।সেদিন আমরা ১০ টি মত মন্ডপ ঘুরে দেখেছি।অনিতা সেদিন নিমন্ত্রণ না করলে হশত এত পূজা দেখাই হতোনা হয়ত।সেজন্য কৃতজ্ঞ অনিতা।
নিউজটি পড়েছেন : ২৬৪