
“শিশু শ্রমঃ শিশু শিক্ষা নিশ্চিত”
–জিতেন্দ্র লাল বড়ুয়া
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগর। আজ যারা শিশু, কাল তারাই নেতৃত্ব দেবে,আজ যারা বিখ্যাত ব্যক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত,একদিন তারা ও শিশু ছিলেন। তাই শিশুদের নিয়ে আজ ভাববার এবং গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বেশি। দেশের অনেক শিশু এখন ও শিক্ষা গ্রহণের সূযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছে রেল লাইনের ধারে,অলি গলিতে, কিংবা চায়ের দোখানে,রেষ্টুরেন্টে,বাজারে, পথিমধ্যে, কল-কারখানায় অনেক শিশু দেখা যায় শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। এই শিশুরা শিক্ষা গ্রহণের সূযোগ থেকে বঞ্চিত। এসব শিশুরা শিক্ষা গ্রহণ থেকে বাইরে থাকলে বাধ্যতামূলক শিক্ষা কখনো নিশ্চিত হতে পারে না।
“ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে”।অর্থাৎ আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আবার বলছি শিশুরাই আগামীর দেশ ও জাতি গড়ার কারিগর। শিশুর শ্রম বা কর্মপরিবেশ শিশুর দৈহিক, মানসিক, আত্বিক,নৈতিক ও সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক ও ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়। শিশুশ্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে আসতে হবে। এসব শিশুদের দিয়ে অনেক ভারী কাজ করানো হয়, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো হচ্ছে। শিশুশ্রম বন্ধে গ্রাম ও শহরভিত্তিক পূণর্বাসন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসতে হবে। যেসব শিশুরা অভাবের কারণে শ্রমে নিয়োজিত হচ্ছে তাদের তালিকা তৈরী করে তাদেরকে শিশুভাতা প্রদান করে বিদ্যালয়মূখী করতঃ শিক্ষা গ্রহণের সূযোগ সৃষ্টি করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। শিশুশ্রম নিরসনে যেসব আইন রয়েছে তা বাস্তবায়নের প্রয়োজন রয়েছে। স্বল্পমেয়াদী,মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করার ও প্রয়োজন রয়েছে।
শিক্ষা গ্রহণ করা সকল শিশুর মৌলিক অধিকার। উন্নয়নশীল বাংলাদেশে শিক্ষার মত মৌলিক অধিকার সকল শিশুদের জন্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়ে উঠেনি তাই সুবিধা বঞ্চিত শিশুগুলো এখনো শিক্ষা লাভ করার সূযোগ পাচ্ছে না। শিক্ষা লাভ করার সূযোগ প্রতিটি শিশুর মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলেই আমাদের দেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে এসে সুবিধা বঞ্চিত এসব শিশুদের শিক্ষা লাভ করার সূযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। প্রতিটি শিশুর অন্তরে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে দিতে হবে।
এসব শিশুদের কচি মায়াভরা মুখগুলো দেখলে সত্যিই খুব খারাপ লাগে। যখনই ডেকে জানতে চাওয়া হয় তখন তাকিয়ে থাকে আর মাথা নীচু করে থাকে। খুব খারাপ লাগে ভাবতে, এদের ওতো শিক্ষা লাভ করার অধিকার রয়েছে। আমাদের দেশে এসব বঞ্চিত শিশুরা শিক্ষার মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে আজ অবহেলিত। এই অবহেলিত শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতকরণে সরকারি বেসরকারি, সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে এসে শিক্ষা লাভ করার সূযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। তবেই বাধ্যতামূলক শিক্ষা বাস্তবায়নের আওতায় সবশিশু আসবে। এসব বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে দেয়ার লক্ষে সম্মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে। এরা শিক্ষা গ্রহণের যথাযথ সূযোগ পেলে এই শিশুরাই ধরে রাখতে পারবে দেশের সম্মান। এই শিশুরাই একদিন নেতৃত্ব দিবে। আজকে যারা শিশু তারাই আগামী দিনে আবির্ভূত হবে সমাজ ও রাষ্ট্রের কর্ণধার হিসাবে। আর তাই শিশুদের হাতে ভবিষ্যৎ নির্মিত হবে বলে পৃথিবীকে তাদের বাসযোগ্য করে তুলতে এত প্রচেষ্টা।
“এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি,
নবজাতকের কাছে এ আমার অঙ্গীকার”।