
ছোটফেনী নদীতে ভয়াবহ ভাঙ্গন অব্যাহত
দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে হুমকিতে পড়বে বিস্তীর্ণ জনপদ
ফেনী প্রতিনিধিঃ-ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের ছোট ফেনী নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে ভয়াবহ নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে চান্দলা, ছয়আনি, বদরপুরসহ আশপাশের গ্রামের অসংখ্য ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, সড়ক ও স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে মসজিদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও।
স্থানীয়রা জানান, ২০২৪ সালের আগস্টে নোয়াখালীর মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার পর ছোট ফেনী নদীর স্বাভাবিক গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যায়। এরপর নদীভাঙনের তীব্রতা বাড়তে থাকে। চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টিপাত ও অব্যাহত বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।কুঠিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন, মুছাপুর ক্লোজার ভাঙা ও বালু উত্তোলনের কারণে আমাদের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমার পাকা ঘরটিও যে কোনো সময় নদীতে চলে যেতে পারে।
বদরপুর জামে মসজিদ এলাকার জসিম উদ্দিন জানান, ভাঙনে মসজিদের পাশের রাস্তার অর্ধেক নদীতে বিলীন হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মসজিদটিও নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।
ফেনী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রবিউল হক শিমুল বলেন,অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পুরো চরমজলিশপুর ইউনিয়ন হুমকির মুখে পড়বে। আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিচ্ছি। স্থানীয় জনগণকে সাথে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছি। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে রক্ষা করতে সরকার যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয় সেজন্য বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছি। অবিলম্বে যদি আমাদের নদী রক্ষা না হয় তাহলে জনগণ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।
এ অবস্থায় জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ও পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তার হোসেন মজুমদার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসক জানান, নদী ভাঙন রোধে পাউবোর সমন্বয়ে জিও ব্লক স্থাপনসহ অস্থায়ী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এবং অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেনসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ ও স্থায়ী নদী রক্ষা প্রকল্প গ্রহণ না করলে চরমজলিশপুর ইউনিয়নের বিশাল অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
