বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে গণভবন প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণকালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ করতে এবং কমপক্ষে ৩ টি গাছ লাগানোর উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে গত ৬ জুন দুপুর ১২.০০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম জেলায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নিয়ে এক বিশেষ জুম সভার আয়োজন করা হয়। জুম সভাতে সংযুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা, ১৫টি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণ এবং মহানগরের ৬ টি সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণ।
উক্ত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসন্ন বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রাম জেলার ১৫ টি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কমপক্ষে ১০ হাজার করে মোট ২১ লক্ষ ১ হাজার এবং মহানগরের ৬ টি রাজস্ব সার্কেলে মোট ২ লক্ষ ৭৮ হাজার সর্বমোট ২৩ লক্ষ ৭৯ হাজার বিভিন্ন ধরণের বনজ, ফলজ, ভেষজ ও নান্দনিক বৃক্ষরোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম। জেলা প্রশাসনের অনন্য এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে “২৩ সালে ২৩ লক্ষ”। এর আওতায় ২০২৩ সালের মধ্যে ২৩ লক্ষ বিভিন্ন ধরণের বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সরকারি খাস জায়গা, আশ্রয়ণ কেন্দ্রের খালি জায়গা, নদীর পাড়, সড়কের দু পাশে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠের চারপাশে, পতিত জমি, জনগণের বসতবাড়ি ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন গাছের নামে চট্টগ্রামের যে সকল স্থান রয়েছে যেমন, আমবাগান, কদমতলী, বটতলী, নিমতলা, সে স্থানে সেই গাছ লাগানো হবে যাতে ওই স্থানের নামের সার্থকতা ফিরে আসে। এ লক্ষ্যে আজ শেখ রাসেল শিশু পার্ক, আমবাগানে আম গাছ লাগাবেন জনাব এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, সভাপতি, রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর-সংস্থা ও এনজিও’র সাথে সমন্বয় করে এই কর্মসূচী পরিচালনা করবে জেলা প্রশাসন। এই কর্মসূচির সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের মানুষ সম্পৃক্ত থাকবেন।
এই কর্মসূচিতে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অগ্রগণ্য ভুমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি করে গাছের চারা দিয়ে সেটির পরিচর্যা করে বড় করার জন্য পরামর্শ করবো যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেম তৈরি হয়। আজকের শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিক তাই আগামীতে পরিবেশ রক্ষায় তারাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রতি বছরই কারণে-অকারণে প্রচুর গাছ কাটা হয়, রোপণ করা হয়, তাও আবার পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত বন ব্যবস্থাপনা, অবাধে বৃক্ষ নিধন ও বন উজাড়ের কারণে বন ও বনজ সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। অবাধে বৃক্ষ নিধনে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন। অযাচিত বৃক্ষ নিধন রোধে তাই জেলা প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
পরিশেষে, “২৩ সালে ২৩ লক্ষ” শীর্ষক জেলা প্রশাসনের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে সফলভাবে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান করছি। আমি বিশ্বাস করি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা ২০২৩ সালে আমাদের লক্ষ্যমাত্রার থেকেও বেশি বৃক্ষরোপণ করতে সক্ষম হবো।