তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার কালীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কাজী সাদাত আলী চৌধুরী ।যিনি মোগল আমলে চট্রগ্রামে কাজী আল কোজ্জাত(প্রধান বিচারক) পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।পিতার কর্মস্থল সুত্রে মৌলবি আব্দুল মুক্তাদিরের শিক্ষা জীবন কাটে ভারতের বিভিন্ন স্থানে।বিশেষ করে কলকাতায় তাঁর জীবনের দীর্ঘ সময় কাটে, তাদের বাসা ছিল কলকাতায় মল্লিক বাজারে।
কর্ম জীবনে আব্দুল মুক্তাদির চৌধুরী অবিভক্ত ভারত বিহারের পাটনা ও কটকের কলেজে আরবি ও ফার্সি বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেন। গবেষক ও অধ্যাপক হিসাবে তিনি সুপরিচিত ছিলেন।
ফার্সি ও আরবি ভাষা-সাহিত্যে সুপণ্ডিত আব্দুল মুক্তাদির চৌধুরী কলকাতায় ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরী ও পাটনা বানকীপুরে অবস্থিত খোদা বক্’শ লাইব্রেরীতে দীর্ঘকাল গবেষণা করেন। তিনি এ সকল লাইব্রেরীতে রক্ষিত দুষ্প্রাপ্য ও প্রাচীন পাণ্ডুলিপির তালিকা প্রস্তুত করেন।বিশেষত বিখ্যাত খোদা বক্’শ লাইব্রেরীর পাণ্ডুলিপি বিভাগের সহায়তায় সে সময় পযর্ন্ত সংগৃহীত সকল ইরানী কবির ১৬ খন্ড বিশিষ্ট এক বিশাল সংকলন প্রস্তুত করেন।যার শিরোনাম Catalogue of the Arabic and pcrsian Manuscripts in the Oriental public Library Bakiour.
এই মহামূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য সংকলন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত আছে।দীর্ঘকাল তাঁকে পাটনায় অবস্থান করতে হতো গবেষণার কাজে, তাঁর পরিবারের সদস্যরা থাকতেন কলকাতায়। ১৯৩৪ সাল পযর্ন্ত একটানা কয়েক বছর ধরে চলে এই গবেষণা।কর্ম ১৯৩৫ সালে অধ্যাপনা থেকে অবসর গ্রহণ করেন।ব্রিটিশ সরকার শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জান্য তাঁকে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করেন।১৯৪০ সালে এই কর্মবী ইন্তেকাল করেন।কলকাতার গোবরা কবরস্থানপ তাঁকে সমাহিত করা হয়। কলকাতা থেকে প্রকাশিত বিখ্যাত The Statesman পত্রিকায় তাঁর মৃত্যু সংবাদ প্রকাশিত হয়। রিপোর্ট লিখা হয়-The death occured in calcutta on coatnesday of khan Bahadur A. Muqtadir farmerly professor of persian Ravcnshaw college, cuttack,as professor of.persian.He retired from the post in 1935.
The khan Bahadur is serviced by his widow. one son and daughter. The funeral took place in The Gor-e-Gharrban at Gobru and was Largely attended.
চট্রগ্রামের কৃতী সন্তান এক খ্যাতনামা ওরিয়েন্টাল গবেষক খান বাহাদুর অধ্যাপক আব্দুল মুক্তাদির চৌধুরীর এক পুত্র ও এক কন্যার জনক। একমাত্র পুত্র আহসান আহাম্মদকে ভর্তি করান কলকাতার মাদ্রাসা আলিয়ায় ১৯২৮ সাল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৪০ সালে ফার্সি, ভাষা ও সাহিত্যে ১ম শ্রেণীতে এম এ পাশ করেন ও স্বর্ণপদকে ভূষিত হন।পরের বছর মর্ডান ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজে (পালি,হিন্দী,উর্দু ও বাংলা) এম এম পরীক্ষায় প্রথম স্থান পান।তিনি প্রথমে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ ও পরে ইসলামিয়া কলেজ,ঢাকা কলেজ, রাজশাহী কলেজ ও সিলেটের এমসি কলেজে অধ্যাপনা করেন।চাকরি ছেড়ে তথ্য মন্ত্রাণালয়ে সহকারী সম্পাদক এবং দৈনিক পাকিস্তান এর (ব্যবস্থাপনা সম্পাদক) দ্যা নিউ নেশন ও সাপ্তাহিক রোববার পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন(মহাব্যবস্থাপক)। উর্দু সাহিত্যের একজন প্রখ্যাত বাঙালি কবি হিসেবে খ্যাতিমান আহসান আহম্মদ আসক ১৯৯৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।আহসান আহম্মদ আসক কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী লেখক ও জীবদ্দশায় তাঁর কিছু কবিতার উর্দু অনুবাদ করে কবি নজরুলসহ সুধীজনের প্রশংসা অর্জন করেন।তাঁর দুই পুত্র ও দুই কন্যা ঢাকায় বসবাস করেন।
এই মহামানুষদের জীবনী তুলে ধরতে আমাকে আমার এক প্রিয় বড় ভাই সাইমুম ভাই অনেক সাহায্য করেছেন। যা বর্ণনাতীত আমি ভাইএর কাছে কৃতজ্ঞ তিনি না হলে আমার কালীপুরে আর এক খান বাহাদুর জীবনী চিরতরে মুছে যাইত।
" যে দেশে গুণী কদর নাই সেই দেশে গুণী জন্ম হয় না।"
আসুন আমরা আমাদের এই অমর গুণীদের রেখে যাওয়া পথ অনুসরণ করি। সমাজকে সাজায় আরো সুন্দর করে।
বাঁশখালী প্রথম "খান বাহাদুর" হলেন কালীপুর সাহেব বাড়ির খান বাহাদুর হলেন খান বাহাদুর আন্নর আলী খান (সদর আমিন ও - প্রথম মুসলিম সাবজজ)(১৮১২-১৮৯২ইং) যার অবদান এখনো কালীপুর গ্রামে রয়েছে সেই দু শতাধিক বছরের পুরানো "সদর আমিন মসজিদ", সদর আমীন হাট,সদর আমীন খাল। যার সম্মানে ইজ্জতনগর নাম করন করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত দার্শনিক হজরত ডেপ্যুটি শাহ মোহাম্মদ বদিউল আলম(রহঃ) (১৮৫৬-১৯৩১ইং)এর পিতা। আর হজরত ডেপ্যুটি শাহ মোহাম্মদ বদিউল আলম(রহঃ) হলেন প্রথম মুসলিম সাংবাদিক (দি মোহামেডান অবজারভার (১৮৯২ -১৮৯৪ইং) কলকাতা), বাঁশখালীর প্রথম স্কুল ইজ্জতনগর হাই স্কুল ১৯০৫ প্রতিষ্ঠিত করেন। দ্বিতীয় হলেন এই খান বাহাদুর আব্দুল মুক্তাদির চৌধুরী। পরে উপাধি পান খান বাহাদুর বদি আহম্মদ চৌধুরী।