ভুক্তভোগী ভিকটিম (১৪) রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার লংগদু থানার রাঙ্গীপাড়া এলাকার হতদরিদ্র ও অসহায় পরিবারের সন্তান। ভিকটিমের বাড়ির আশপাশে কোন নলকূপ না থাকায় প্রাকৃতিকভাবে সৃজিত পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি ঝর্ণা থেকে গ্রামের সকলেই খাবারের পানি নিয়ে এসে জীবনধারণ করে থাকে। গত ১৩ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখে আনুমানিক বিকাল ১৭৩০ ঘটিকায় প্রতিদিনের ন্যায় ভিকটিম কলসি নিয়ে খাবারের পানির জন্য বাড়ি থেকে খানিক দূরের উক্ত পাহাড়ি ঝর্ণায় যায়। ভিকটিম ঝর্ণা থেকে পানি নিয়ে ফেরার পথে পূর্ব হতে নির্জন স্থানে ওঁৎ পেতে থাকা একই গ্রামের মোঃ জহিরুল ইসলাম এবং তার অজ্ঞাত সহযোগী পিছন দিক থেকে ভিকটিমের হাত ধরে গামছা দিয়ে ভিকটিমের মুখ বেঁধে ফেলে এবং ভিকটিমের পরনের ওড়না দিয়ে ভিকটিমের দুই হাত বেঁধে প্রধান আসামি পার্শ্বের তামাক ক্ষেতে নিয়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। উক্ত ধর্ষণের ঘটনাটি কাউকে বললে ভিকটিম এবং তার পরিবারের বড় ধরনের ক্ষতি করবে মর্মে তাকে হুমকি প্রদান করে আসামি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। উক্ত ধর্ষণের ফলে ভিকটিম অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য তাকে প্রথমে লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে নালিশ করলে বিজ্ঞ আদালত বাদীর অভিযোগকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে নিয়মিত মামলা রুজু করতে লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ প্রদান করেন। ফলে, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার লংগদু থানায় একটি ধর্ষণ মামলা রুজু হয়। যার মামলা নং- ০৫/১৪, তারিখ- ২৪ মার্চ ২০২৪ ইং, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১)/৩০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্রে বর্ণিত মামলা রুজু হওয়ার পর এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত ধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন আতুরার ডিপো এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ০৩ অক্টোবর ২০২৪ইং তারিখে আনুমানিক ১৫৫০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোঃ জহিরুল ইসলাম (২৭), পিতা- মোঃ রাজ্জাক আলী, সাং- রাংগীপাড়া, থানা- লংগদু, জেলা- রাঙ্গামাটি'কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি হওয়ার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, সে মামলা দায়ের হওয়ার পর হতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে অবস্থান করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার লংগদু থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।